ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪

চকরিয়ায় ফুটপাতের জমি দখলে সড়ক বিভাগের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ কাজের অভিযোগ

এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের বিরুদ্ধে এবার অধিগ্রহণকৃত আরকান মহাসড়কের ফুটপাতের জায়গা দখলে নিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। চকরিয়া সড়ক বিভাগের অফিসের সামনে মহাসড়কের ফুটপাতের জায়গা দখলে নিয়ে সংস্থাটির লোকজন সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন। এই অবস্থার কারণে সড়কের ওই অংশের ফুটপাত সংকোচিত হয়ে যাচ্ছে। এতে ভবিষ্যতে অনুকুলস্থলে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়ে প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া পৌরসভার স্থানীয় ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুজিবুল হক মুজিব। তিনি বলেন, চকরিয়া সড়ক উপবিভাগের অফিসের সামনে কক্সবাজার চট্টগ্রাম মহাসড়কের অন্তত দেড়শত ফুট জায়গা অনেকবছর আগে অধিগ্রহণ করে সড়ক বিভাগ। তাদের অফিসের সন্নিকটে বর্তমান মাতামুহুরী চারলেন সেতুর নির্মাণ কাজ চলমান। সেখানে মহাসড়কের পাশে ফুটপাতের জায়গা দখলে নিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা জনস্বার্থে বড়ধরণের সমস্যা তৈরী হয়েছে।

কাউন্সিলর মুজিবুল হক বলেন, সড়ক বিভাগের অফিসের সামনে মহাসড়ক লাগোয়া ফুটপাতের জায়গায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণের ফলে ওই এলাকায় মহাসড়কের অংশ সংকোচিত হয়ে যাচ্ছে। যদিও সড়ক বিভাগ চাইলে অধিগ্রহণের জায়গার ভেতরের অংশে (পুরানো সীমারেখা) গিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে পারতেন। এখন একেবারে মহাসড়কের পাশে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাবার কারণে ফুটপাতের জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে। তাতে ফুটপাত দিয়ে চলাচলকারী সর্বসাধারণ বিপাকে পড়ছেন।

সড়ক বিভাগের এইধরনের অযৌক্তিক কর্মকাণ্ডের কারণে মহাসড়কের পাশে ফুটপাত দিয়ে চলাচলকারী চকরিয়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের জনসাধারণের পাশাপাশি চকরিয়ার বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান জমজম হাসপাতালে রোগী আনা নেয়াও হুমকির মুখে পড়ছে। তিনি দাবি করেন, চকরিয়ার জমজম হাসপাতাল সমগ্র দক্ষিণ চট্টগ্রামের বৃহত্তর ও আধুনিকমানের একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এ হাসপাতালে প্রতিদিন কম হলেও ৮ শত থেকে এক হাজার রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। এইক্ষেত্রে আমার একটাই দাবি, সড়ক বিভাগ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজটি বর্তমান স্পট থেকে সরিয়ে নীচর দিকে অর্থ্যাৎ পুরানো সীমানা পয়েন্ট নিয়ে নির্মাণ করা হোক। তাতে সড়কটির ওই অংশের জায়গা সংকোচিত হবেনা। ফুটপাতের জায়গাও উন্মুক্ত থাকবে, পাশাপাশি জনগণ এবং জমজম হাসপাতালে রোগীরা নিরাপদে চলাচল করতে পারবে।

স্থানীয় বাসিন্দা চকরিয়া উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি আমির হোসেন আমু বলেন, সড়ক বিভাগ যেখানে বেদখল হওয়া সরকারি অধিগ্রহণকৃত জায়গা উদ্ধারে হিমশিম খাচ্ছেন সেখানে জনগণের চলাচলের ফুটপাতের জায়গা দখলে নিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা কতখানি যোক্তিক। আমরা জনস্বার্থে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ বর্তমান স্পষ্ট থেকে সরিয়ে নীচের অংশে পুরানো স্থানে করার দাবি জানাচ্ছি।

বিষয়টি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের চকরিয়া উপবিভাগের সহকারী প্রকৌশলী (এসও) দিদারুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কের পাশে ফুটপাতের জায়গা অবশিষ্ট রেখেই আমরা সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছি। এই কাজটি বাস্তবায়নে আলাদা ডিজাইন করা হয়েছে। মুলত কাজটি করছেন মাতামুহুরি সেতু নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
তিনি বলেন, ডিজাইনে ভবিষ্যতে মাতামুহুরী সেতুর এপ্রোচ সড়ক ও চারলেন সড়কের সম্ভ্যবতা যাছাই করে করা হচ্ছে। সেখানে ফুটপাত দিয়ে জনসাধন চলাচলের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে তিনি সীমানা প্রাচীর বর্তমান স্পষ্ট থেকে সরিয়ে নীচের অংশের করা সম্ভব হতো স্বীকার করে বলেন, সামনের অংশে জায়গা খালী থাকলে দখলবাজির ঘটনা ঘটে। তাই সেই বিষয়টি মাথায় রেখে বর্তমান স্পষ্টে সীমানা প্রাচীর করা হচ্ছে।

কক্সবাজার চট্টগ্রাম মহাসড়কের একেবারে সন্নিকটে ফুটপাতের জায়গা দখলে নিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার বিষয়টি অবহিত করা হলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, জনগনের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করে ফুটপাতের জায়গা রেখেই কেবল সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ করা বাঞ্ছনীয়।
যদি সেখানে কোনধরনের গলদ থাকে তা হলে এব্যাপারে ৃসড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ###

পাঠকের মতামত: